ইউনূসের সাথে পোপ ফ্রান্সিসের সাক্ষাত : ফিলিস্তিন এবং বিশ্বজুড়ে সমস্ত সংঘাতের বিষয়ে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান
ইউনূস সেন্টার প্রেস রিলিজ – মে ১৫, ২০২৪
১১ মে ২০২৪ ভ্যাটিক্যান সিটিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পোপের সাথে দেখা করেন এবং বৈশ্বিক সংকটসমূহ নিয়ে আলোচনা করেন। প্রফেসর ইউনূস মানব ভ্রাতৃত্বের উপর দ্বিতীয় বিশ্ব সম্মেলনে পিস রাউন্ড টেবিলের কো-চেয়ার ছিলেন।
উক্ত সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার প্রতিলিপির একটি অংশ নিম্নরূপ:
"আমরা যুদ্ধ প্রত্যাখ্যান করি: অস্ত্রের উপর কূটনীতির জয় হোক। আমরা শান্তি চাই!
আমরা, মানব ভ্রাতৃত্বের দ্বিতীয় বিশ্ব সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তি এবং বেসরকারি সংস্থাসমূহ গম্ভীরভাবে নিম্নলিখিত ঘোষণাগুলি করছি:
যেহেতু যুদ্ধের দাবানল ইউক্রেন, গাজা উপত্যকা এবং ফিলিস্তিনি অধিকৃত অঞ্চল, সুদান, মায়ানমার, কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র এবং বিশ্বব্যাপী আরও অনেক স্থান বিধ্বস্ত করেছে, আমরা মানব ভ্রাতৃত্বের দ্বিতীয় বিশ্ব সভায় অংশগ্রহণকারীরা সর্বত্র চলমান সংঘাতের অবসানের জন্য আমাদের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করছি।
ইউক্রেনে আগ্রাসন বন্ধ হোক এবং একটি ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তির প্রতি সমাধান পাওয়া যাক।
গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে হত্যা বন্ধ এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে হবে এবং মানবিক সাহায্যের জন্য নিরাপদ এবং অনিয়ন্ত্রিত প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাই একটি ইসরায়েল এবং একটি ফিলিস্তিনের দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের জন্য দৃঢ় সংকল্পের সাথে অনুসরণ করার পাশাপাশি জেরুজালেম শহরের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে নিশ্চিত বিশেষ মর্যাদাকে দৃঢ়তার সাথে অনুসরণ করার আহ্বান জানাচ্ছি যাতে ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিরা অবশেষে শান্তি এবং নিরাপত্তায় বসবাস করতে পারে।
গাজার শিশুরা, যুদ্ধাস্ত্রে নিহত প্রায় ১৪০০০ শিশু বা যারা ক্ষুধা ও অসুখে মারা যাচ্ছে, বোমা হামলায় আক্রান্ত হাসপাতালগুলোতে তারা আশ্রয় নিতে পারে না এবং তারা সেখানে আর অপেক্ষা করতে পারে না। গাজায় মানবিক সাহায্যের অনুমতি দিতে হবে। জিম্মি ও রাজনৈতিক বন্দীদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
মধ্যপ্রাচ্যে অঞ্চলে আরও অস্থিতিশীলতা এড়াতে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হোক। আমাদের সুদান, ইয়েমেন, ইথিওপিয়া, ডিআরসির মতো জায়গায় অভ্যন্তরীণ সংঘাতের বৃদ্ধি রোধ করা উচিত এবং বিশ্বজুড়ে সমস্ত সংঘাতের অবসান ঘটাতে উচিৎ।
আমরা শান্তিকে মানুষের সহাবস্থানের মৌলিক ভিত্তি হিসাবে নিশ্চিত করার জন্য একটি আন্তরিক আবেদন জারি করছি।
শান্তি শুধু যুদ্ধের অনুপস্থিতি নয়; এটি ভ্রাতৃত্ব, সামাজিক ন্যায়বিচার, দারিদ্র্যের অবসান, লিঙ্গ সমতা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি দায়বদ্ধতা, জাতি এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে সহযোগিতা। এটি দেহের সম্প্রীতি, সৃষ্টির পবিত্রতা এবং সুরক্ষা। শান্তি প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার।
শান্তি আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে তৈরি হয় এবং আমাদের প্রত্যেকের প্রতিদিনের পছন্দের মধ্যে এর প্রতিফলন দেখা যায়। শান্তির শুরু হয় তোমার সাথেই।
ছবির ক্যাপশন ; ভ্যাটিকান সিটিতে মানব ভ্রাতৃত্বের সম্পর্কিত ২য় বিশ্ব সম্মেলনে পোপ ফ্রান্সিসের সাথে অধ্যাপক ইউনূস।
সমাপ্ত।