জাতি সংঘের নতুন মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেসের সাথে প্রফেসর ইউনূসের বৈঠক
ইউনূস সেন্টার প্রেস রিলিজ (দাভোস, ২২ জানুয়ারী, ২০১৭):
সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনু্িষ্ঠত বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের পাশাপাশি জাতি সংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের সমর্থকদের (অ্যাডভোকেট) একটি বিশেষ সভায় যোগদানের ও জাতি সংঘের নতুন মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেসের সাথে বৈঠকের জন্য নোবেল লরিয়েট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
দাভোসে অনু্িষ্ঠত বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে অংশগ্রহণকারী জাতি সংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের সমর্থকদের সকলেই এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এঁদের মধ্যে ছিলেন নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী এরনা সলবার্গ, ইউনিলিভারের প্রধান নির্বাহী পল পোলম্যান, কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত ধো এবং প্রফেসর ইউনূস। জাতি সংঘ মহাসচিব ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যেগুলো অর্জনে এর সমর্থকরা কীভাবে সহায়তা করতে পারেন সে বিষয়ে তাঁদের পরামর্শ চান। জাতি সংঘের মহাসচিব হিসেবে তিনি কীভাবে তাঁদের কাজে সহায়তা করতে পারেন সে বিষয়েও তিনি তাঁদের মতামত জানতে চান।
সমর্থকদের প্রত্যেকেই এ বিষয়ে সর্বোত্তম কর্মপন্থা কী হতে পারে সে বিষয়ে তাঁদের মতামত জানান। প্রফেসর ইউনূস নারী, তরুণ সমাজ ও সাধারণভাবে সিভিল সোসাইটির সমবেত শক্তিকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে চালিত করার জন্য জোরালোভাবে সুপারিশ করেন। তিনি বিশেষভাবে প্রস্তাব করেন যে, জাতি সংঘ মহাসচিব নিয়মিতভাবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তরুণদেরকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য সম্পর্কে সচেতন করতে ও এই লক্ষ্য অর্জনে বিভিন্ন কার্যক্রমে তাদেরকে সম্পৃক্ত করতে পারেন এবং এই উদ্দেশ্যে নেতৃস্থানীয় দেশগুলোর অর্জন ও ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে তাদেরকে অবহিত করতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাঁর বক্তৃতা মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হতে পারে। গুতেরেস প্রফেসর ইউনূসকে তাঁর পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং দারিদ্র বিমোচনে প্রফেসর ইউনূসের অসামান্য অবদানের জন্য তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করেন।
দাভোসে সপ্তাহব্যাপী বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম চলাকালে প্রফেসর ইউনূস টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বিষয়ক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তিনি বিশিষ্ট চিত্র নির্মাতা রিচার্ড কার্টিস ও সেলিব্রিটি শেফ জ্যামি অলিভার আয়োজিত বিশ্বব্যাপী প্রভাবশালী ব্যক্তিদের একটি বিশেষ প্রাতঃরাশ সভায় বক্তৃতা দেন। উল্লেখ্য যে, এই দু’জন খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব তাঁদের প্লাটফর্ম ও খ্যাতিকে কাজে লাগিয়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন বার্তা ব্যাপক জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছানোর জন্য নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন। প্রফেসর ইউনূস বলেন যে, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের বার্তাগুলো প্রচারের ক্ষেত্রে ২০৩০ সালের মধ্যে এই লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্য মাঠ পর্যায়ে যেসব কাজ হচ্ছে তার প্রচারও গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এ বিষয়ে বাংলাদেশে ও পৃথিবীর অন্যত্র সামাজিক ব্যবসা নিয়ে যে সকল কাজ হচ্ছে এবং বাংলাদেশে নবীন উদ্যোক্তা কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র তরুণ-তরুণীরা কীভাবে উদ্যোক্তায় পরিণত হচ্ছে তা তুলে ধরেন। তিনি একটি নতুন পৃথিবী গড়ে তুলতে তাঁর “তিন শূন্য” - অর্থাৎ শূন্য দারিদ্র, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য নীট কার্বন নিঃস্বরণ - কেন গুরুত্বপূর্ণ তাও ব্যাখ্যা করেন।
এছাড়াও প্রফেসর ইউনূস জাতি সংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য সংক্রান্ত অ্যাডভোকেসী গ্রুপের সমন্বয়কারী জাতি সংঘের সহকারী মহাসচিব টমাস গাসের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং দাভোসে জাতি সংঘ পার্টনারশীপ স্পেসে জাতি সংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের উপর সরাসরি সম্প্রচারিত একটি সাক্ষাৎকারে অংশ নেন।
ছবির ক্যাপশন-১: সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনু্িষ্ঠত বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের পাশাপাশি অনুষ্ঠিত জাতি সংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের সমর্থকদের একটি বিশেষ সভায় নোবেল লরিয়েট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস জাতি সংঘের নতুন মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেসের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন।
ছবির ক্যাপশন-২: সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনু্িষ্ঠত বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের পাশাপাশি অনুষ্ঠিত জাতি সংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের সমর্থকদের একটি বিশেষ সভায় নোবেল লরিয়েট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে জাতি সংঘের নতুন মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেসের সাথে দেখা যাচ্ছে।
Source: Yunus Centre
Updated Date: 8th March, 2017