grameen জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে “খাদ্য নিরাপত্তা ও শান্তির লক্ষ্যে খাদ্য ও ক

ইউনূস সেন্টার প্রেস রিলিজ (রোম, ১১ মে ২০১৬):

 

বিশ্ব ব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা ও শান্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১১ মে ২০১৬ রোমে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে “খাদ্য নিরাপত্তা ও শান্তির লক্ষ্যে খাদ্য ও কৃষি সংস্থা-নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ীদের মৈত্রী” (FAO-Nobel Peace Laureates Alliance for Food Security and Peace) ঘোষণা করা হলো। পাঁচজন নোবেল শান্তি পুরষ্কার জয়ী এবং খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মহাপরিচালক হোসে গ্রাজিয়ানো রোমে অবস্থিত সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর রাষ্ট্রদূতদের উপস্থিতিতে একটি বিশদ অনুষ্ঠানে এই মৈত্রী ঘোষণায় স্বাক্ষর করেন।

খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মহাপরিচালক এই মৈত্রীর ধারণা নিয়ে নোবেল লরিয়েট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে গত বছর আলোচনা করেন এবং তাঁকে এই উদ্যোগে অংশ নিতে অনুরোধ করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মহাপরিচালক হোসে গ্রাজিয়ানো ও প্রফেসর ইউনূসের সাথে সশরীরে যোগ দেন নোবেল শান্তি পুরষ্কার জয়ী কোস্টারিকার প্রেসিডেন্ট অস্কার আরিয়াস সানচেজ, ইয়েমেনের তাওয়াক্কল কারমান ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের বেটি উইলিয়ামস। অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে কফি আনান তাঁর ভিডিও বার্তা পাঠান।

এই যুগান্তকারী উদ্যোগটি গবেষণা-সমর্থিত এই ধারণার উপর গৃহীত হয়েছে যে, দীর্ঘ মেয়াদে খাদ্য নিরাপত্তা ছাড়া শান্তি এবং শান্তি ছাড়া খাদ্য নিরাপত্তা কোনটিই সম্ভব নয়।

খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মহাপরিচালক কর্তৃক উদ্বোধনকৃত এই অনুষ্ঠানে নোবেল লরিয়েটগণ ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্ব থেকে ক্ষুধা নির্মূলের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে কাজ করে যাবার ক্ষেত্রে তাঁদের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস, যিনি জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (Sustainable Development Goals) সংক্রান্ত সমর্থকদের একজন, কিভাবে উদীয়মান প্রযুক্তির সীমাহীন ক্ষমতা ব্যবহার করে এবং বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের তরুণদের চাকরী-প্রার্থী হবার পরিবর্তে উদ্যোক্তায় রূপান্তরিত করে সামাজিক ব্যবসার ব্যবসায়িক পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে শূন্য ক্ষুধা ও শূন্য অপুষ্টির সমস্যা মোকাবেলা করা যায় তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন যে, বর্তমান তরুণরা মানব ইতিহাসের সবচেয়ে উদ্ভাবনশীল তরুণ প্রজন্ম এবং আমাদের স্বপ্নের দারিদ্র ও ক্ষুধাামুক্ত বিশ্ব তারাই সৃষ্টি করতে পারবে। আমাদের শুধু যা করতে হবে তা হলো তাদেরকে জীবিকার জন্য চাকরী খুঁজে বেড়ানোর বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্তি দেয়া।

নোবেল লরিয়েটদের একটি বিশেষ দলিলে স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে যেখানে তাঁরা প্রত্যেকে শূন্য ক্ষুধা এবং শান্তি অর্জনের রোড ম্যাপ বিষয়ে তাঁদের স্ব-স্ব চিন্তা-ভাবনা লিপিবদ্ধ করেন।

সন্ধায় প্রফেসর ইউনূস ও হোসে গ্রাজিয়ানো জাতিসংঘ মহাসচিবের আমন্ত্রণক্রমে মহাসচিবের সভাপতিত্বে নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভায় শান্তি ও খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে বক্তৃতা দেন। প্রফেসর ইউনূস তাঁর বক্তব্যে ঐ দিনই উদ্বোধনকৃত “খাদ্য নিরাপত্তা ও শান্তির লক্ষ্যে খাদ্য ও কৃষি সংস্থা-নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ীদের মৈত্রী”র মূল লক্ষ্যগুলো সাধারণ পরিষদ সদস্যদের নিকট তুলে ধরেন এবং গ্রামের তরুণদের উদ্যোক্তায় রূপান্তর ও গ্রামের সাথে শহরাঞ্চলের প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করে গ্রামের অর্থনীতিকে উজ্জীবিত করার মাধ্যমে এই তরুণদের গ্রামের প্রতি আকৃষ্ট করে সনাতন কৃষি ও কৃষি অর্থনীতির পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে শান্তি ও ক্ষুধা নির্মূলের লক্ষ্য অর্জনে তাঁর স্বপ্ন ও যুক্তি তুলে ধরেন। তিনি বলেন যে, প্রযুক্তি ও সামাজিক ব্যবসা এই লক্ষ্য অর্জনকে সহজ করে দেবে। তিনি আরো বলেন যে, ক্ষুধা ও অপুষ্টিমুক্ত একটি নতুন পৃথিবী গড়ে তুলতে পুরোনো চিন্তাধারা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্বিন্যাস প্রয়োজন। একাজ করার সামর্থ পৃথিবীর রয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন যে, আমাদের যা প্রয়োজন তা হলো এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য উপযুক্ত ধারণা ও প্রতিষ্ঠান।

 


ছবির ক্যাপশন:১১ মে ২০১৬ রোমে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে “খাদ্য নিরাপত্তা ও শান্তির লক্ষ্যে খাদ্য ও কৃষি সংস্থা-নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ীদের মৈত্রী” (FAO-Nobel Peace Laureates Alliance for Food Security and Peace) এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নোবেল শান্তি পুরষ্কার জয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস, অস্কার আরিয়াস সানচেজ, বেটি উইলিয়ামস, তাওয়াক্কল কারমান এবং খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মহাপরিচালক হোসে গ্রাজিয়ানো দ্য সিলভা।

Source Link:

Source: Yunus Centre

Updated Date: 8th March, 2017

Related Publications