111 প্রফেসর ইউনূস ও ক্লিনটন ফাউন্ডেশন সম্পর্কে আইনমন্ত্রী মহোদয়ের দাবী বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের প

ইউনূস সেন্টার প্রেস রিলিজ(১১ জানুয়ারী  ২০১৭):

 

গত ৭ জানুয়ারী  ২০১৭ দৈনিক জনকণ্ঠ সহ কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত একটি সংবাদের  প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। এই সংবাদ অনুযায়ী আইনমন্ত্রী মহোদয় সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে এই মর্মে মন্তব্য করেছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হিলারী ক্লিনটনের নির্বাচনী তহবিলে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের “চাঁদা প্রদানের” বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন। আইনমন্ত্রী মহোদয়ের দাবী অনুযায়ী প্রফেসর ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে এই অনুদান দিয়েছিলেন যা পরবর্তীতে হিলারী ক্লিনটনের নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহৃত হয়। আইনমন্ত্রী মহোদয়ের মতে, বিষয়টি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রচারিত হলেও প্রফেসর ইউনূস এ বিষয়ে কোন ব্যাখ্যা দেননি। তিনি আরো বলেন, হিলারী ক্লিনটন এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তাঁর সাথে সুসম্পর্কের সুবাদে প্রফেসর ইউনূস এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামানোর স্বপ্ন দেখছিলেন।

একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির নিকট থেকে, বিশেষ করে দেশের আইনমন্ত্রীর নিকট থেকে যিনি দেশের নাগরিকদের জন্য আইনের শাসন নিশ্চিত করা ও আইনের অপব্যবহার থেকে নাগরিকদের রক্ষা করার সর্বোচ্চ দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি - এ ধরনের বক্তব্য সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। প্রফেসর ইউনূস কর্তৃক হিলারী ক্লিনটনের নির্বাচনী তহবিলে চাঁদা প্রদানের আইনমন্ত্রী মহোদয়ের অভিযোগটি একটি ভিত্তিহীন ও নির্জলা মিথ্যা। কোন প্রচার মাধ্যমেই প্রফেসর ইউনূসের বিরুদ্ধে এরকম কোন অভিযোগ তোলা হয়নি। তিনি কখনোই হিলারী ক্লিনটনের নির্বাচনী তহবিলে কিংবা দেশে বা বিদেশে কারো নির্বাচনী তহবিলে কখনো কোন চাঁদা দেননি। প্রফেসর ইউনূস এই অভিযোগ অস্বীকার করে কোন বিবৃতি দেননি বলে আইনমন্ত্রী মহোদয়ের বক্তব্যও সঠিক নয়। গত ২০ এপ্রিল ২০১৬ ও ৩১ আগস্ট ২০১৬ তারিখে ইউনূস সেন্টার থেকে প্রদত্ত দু’টি বিবৃতিতে পরিস্কারভাবে বলা হয় যে, প্রফেসর ইউনূস হিলারী ক্লিনটনকে বা তাঁর নির্বাচনী প্রচারণায় বা ক্লিনটন ফাউন্ডেশনকে কখনোই কোন অর্থ দেননি। ইউনূস সেন্টারের ঐ বিবৃতিতে আরো বলা হয় যে, ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের ওয়েব সাইটে উল্লেখিত উক্ত ফাউন্ডেশনকে প্রদত্ত একমাত্র অর্থ প্রদানের বিষয়টি ছিল গ্রামীণ আমেরিকার, যা ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভের প্রতি বছর আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদানের জন্য “সদস্যপদ, স্পন্সরশীপ ও কনফারেন্স ফি” ক্যাটেগরীতে দেয়া হয়েছিল। গ্রামীণ আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জনাব ভিডার জরগেনসেন ঐ সব সম্মেলনে যোগদানের জন্য ঐ বাৎসরিক চাঁদা ১০ বছর ধরে দিয়েছিলেন। ইউনূস সেন্টারের ঐ প্রতিবাদের সাথে জনাব ভিডার জরগেনসেনের বিবৃতিও সংযুক্ত করা হয়েছিল। আমরা এই প্রতিবাদ লিপির সাথে তাঁর বিবৃতিটি আবারো সংযুক্ত করছি।

গ্রামীণ আমেরিকার প্রেসিডেন্টের প্রদত্ত অর্থ প্রদানের সাথে প্রফেসর ইউনূসের কোন সম্পর্ক নেই এবং ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের ওয়েব সাইটের কোথাও প্রফেসর ইউনূসের চাঁদা প্রদান সংক্রান্ত কোন তথ্যই নেই।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হিলারী ক্লিনটনের নির্বাচনী তহবিলে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের “চাঁদা প্রদানের” বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন বলে আইনমন্ত্রী মহোদয়ের সাম্প্রতিক বক্তব্যটি একান্তই কল্পনাপ্রসূত ও ভিত্তিহীন। ট্রাম্প প্রশাসন এ ধরনের কোন ঘোষণাই দেয়নি।

হিলারী ক্লিনটন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তাঁর সাথে সুসম্পর্কের সুবাদে বাংলাদেশের কোন সরকারকে বা পৃথিবীর কোথাও কোন সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটানোর কোন চিন্তাও প্রফেসর ইউনূস কখনো করেন না।

একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির নিকট থেকে এটা একটা দায়িত্বহীন বক্তব্য ছাড়া আর কিছু নয়। মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন, “এখন যেহেতু ট্রাম্প নির্বাচিত হয়েছেন তিনি এখন খতিয়ে দেখবেন হিলারীকে তাঁর নির্বাচনের জন্য ইউনূস কতো টাকা দিয়েছিলেন।”

আমরা আশা করবো, দেশের সর্বোচ্চ আইন রক্ষাকারী হিসেবে আইনমন্ত্রী মহোদয় হয় একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জাতির সামনে তাঁর অভিযোগসমূহ প্রমাণ করবেন, অথবা তাঁর মিথ্যা বক্তব্যগুলি প্রত্যাহার করে নেবেন।
 



Source Link:

Source: Yunus Centre

Updated Date: 9th March, 2017

Related Publications