উদ্ভাবনী কর্মকান্ডের জন্য কোপেনহেগেনে প্রফেসর ইউনূসের “Women Deliver Award” গ্রহণ

ইউনূস সেন্টার প্রেস রিলিজ (১৮ মে ২০১৬):

নোবেল লরিয়েট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ১৮ মে ২০১৬ কোপেনহেগেনে গ্লোবাল উইমেন ডেলিভার কনফারেন্সের প্লেনারী সেশনে “Women Deliver Award” for Innovation গ্রহণ করেন। পুরস্কার গ্রহণকালে তাঁর বক্তব্যে প্রফেসর ইউনূস বলেন, তিনি এই পুরস্কার সেসব লক্ষ লক্ষ নারীকে উৎসর্গ করছেন যাঁদের সাথে তিনি  গ্রামীণ ব্যাংকে কাজ করেছেন এবং যাঁরা নিজেদের সাহস ও কঠোর পরিশ্রমের দ্বারা নিজেদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছেন। WomanCare Global -এর প্রধান নির্বাহী সনড্রা পেলেটিয়ার প্রফেসর ইউনূসের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

প্রফেসর ইউনূস এই সম্মেলনে “Investing in Girls & Women: Everybody Wins” শীর্ষক প্লেনারী সেশনে একজন প্যানেলিস্ট ছিলেন। সেশনে তাঁর অভিজ্ঞতার বর্ণনা করতে গিয়ে প্রফেসর ইউনূস বলেন যে, তারুণ্য, প্রযুক্তি ও সামাজিক ব্যবসা বিশ্বকে পরিবর্তিত করে দেবে। তিনি বলেন যে, তরুণদের উচিত চাকরী খোঁজার চেয়ে বরং উদ্যোক্তা হবার পরিকল্পনা করা। তিনি বাংলাদেশের গ্রামীণ দরিদ্র মহিলাদের হাতে মুঠোফোন তুলে দেবার কাহিনী বর্ণনা করেন যা তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে। এই ফোন এই দরিদ্র মহিলাদের ও তাদের পরিবারের কাছে প্রযুক্তির দরজা খুলে দিয়েছে। দরিদ্র মহিলাদের কাছে আর্থিক সেবা পৌঁছে দেয়াকে তিনি সবচেয়ে কৌশলগত বিনিয়োগ বলে উল্লেখ করেন যা সকল সমাজেই সম্ভব। ঋণকে মানবাধিকার হিসেবে গ্রহণ করা উচিত বলে তিনি তাঁর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।

সম্মেলনে প্রফেসর ইউনূসের সাথে অন্যান্য প্যানেলিস্টদের মধ্যে ছিলেন প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী অ্যানে-বিরগিট এলব্রেক্টসেন, ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক অ্যান্থনী লেক, এরিকসনের প্রধান নির্বাহী হ্যান্স ভেস্টবার্গ ও ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়ান জেনসেন।

উইমেন ডেলিভার ৪র্থ বিশ্ব সম্মেলন ১৬-১৯ মে ২০১৬ কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলন মেয়ে ও নারীদের স্বাস্থ্য ও অধিকার বিষয়ক বিশ্বের বৃহত্তম সমাবেশ। ২০০৭ সালে প্রথমবার আয়োজিত এই সম্মেলন প্রতি ৩ বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের উদ্দেশ্য নারী ও মেয়েদের উপর বিনিয়োগের গুরুত্বকে আরো দৃশ্যমান করা, এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, নারী ও মেয়েদের উপর বিনিয়োগের শক্তি বৃদ্ধি করা এবং এই বিনিয়োগ উন্নয়নের চালিকা শক্তি হিসেবে কিভাবে নারী ও মেয়েদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করে তা তুলে ধরা। সম্মেলনে নারী ও মেয়েদের উপর ভবিষ্যত বিনিয়োগের মূল ক্ষেত্রগুলি খুঁজে বের করা, এ সংক্রান্ত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা এবং কাংখিত লক্ষ্য অর্জনে এক্ষেত্রে সম্ভাবনাগুলোর পূর্ণ সদ্ব্যবহার করার উপর জোর দেয়া হয়। নারী ও মেয়েদেরকে বৈশ্বিক উন্নয়ন কর্মসূচির কেন্দ্র বিন্দুতে নিয়ে আসা থেকে শুরু করে দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে ও বৃহৎ পরিসরে কর্মযজ্ঞের জন্য নিজেদের উচ্চকাংখ্যাকে আরো প্রসারিত করতে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদেরকে উদ্বুদ্ধ করা হয়। কোপেনহেগেনে   অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে ৫ হাজারের বেশী নেতৃবৃন্দ যোগ দেন যাঁদের অধিকাংশই নারী।

উইমেন ডেলিভার ৪র্থ বিশ্ব সম্মেলন আয়োজনে সহায়তা করেছে অষ্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিল এন্ড মেলিন্ডা গেট্স ফাউন্ডেশন, ইউরোপীয় কমিশন, ফিনল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ফান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ডেনমার্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (ডানিডা), নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নরওয়েজিয়ান উন্নয়ন সংস্থা নোরাড, সুইডিশ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা সংন্থা সিডা, এইচআইভি/এইডস সংক্রান্ত জাতিসংঘ সংযুক্ত কর্মসূচি (ইউএনএআইডিএস), জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল, ইউনিসেফ, জাতিসংঘ ফাউন্ডেশন ও অন্যান্যরা।

সম্মেলনে যোগদান ছাড়াও এই সফরে প্রফেসর ইউনূস জাতিসংঘ ফাউন্ডেশনের পরিচালনা পরিষদের সভায় যোগদান করেন। উল্লেখ্য যে, তিনি এই ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালকদের একজন। সিএনএন-এর প্রতিষ্ঠাতা টেড টার্নার কর্তৃক ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান দ্বারা প্রতিষ্ঠিত জাতিসংঘ ফাউন্ডেশন বিভিন্ন ক্ষেত্রে জাতিসংঘের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অর্থায়ন করে থাকে।



ছবির ক্যাপশন-১ঃ  নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ১৮ মে ২০১৬ কোপেনহেগেনে  অনুষ্ঠিত উইমেন ডেলিভার বিশ্ব সম্মেলনে “Investing in Girls & Women: Everybody Wins” শীর্ষক প্লেনারী সেশনে বক্তব্য রাখছেন। তাঁর বামদিকে ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিঃ ক্রিস্টিয়ান জেনসেন ও ডানদিকে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক মিঃ অ্যান্থনী লেক-কে দেখা যাচ্ছে।

ছবির ক্যাপশন-২ঃ ১৮ মে ২০১৬ কোপেনহেগেনে উইমেন ডেলিভার বিশ্ব সম্মেলনের প্লেনারী সেশনে নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে উদ্ভাবনের জন্য “Women Deliver Award” তুলে দিচ্ছেন উইমেনকেয়ার গ্লোবাল-এর প্রধান নির্বাহী মিস সনড্রা পেলেটিয়ার।

Source Link:

Source: Yunus Centre

Updated Date: 9th March, 2017

Related Publications